কৃত্রিম উপগ্রহের ইতিবৃত্ত! পর্বঃ ১

কৃত্রিম উপগ্রহের ইতিবৃত্ত! পর্বঃ ১
কৃত্রিম উপগ্রহ কি ?
আমরা সকলেই জানি চাঁদ পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরে যা একটি উপগ্রহ হিসেবে পরিচিত। তেমনি কোন গ্রহকে কোন বস্তু একটি নির্দিষ্ট পর্যায়কাল মেনে প্রদক্ষিণ করলে তাঁকে আমরা উপগ্রহ হিসেবে চিনি। এই উপগ্রহ আবার দুই ধরনের হয়ে থাকে যার একটি হল মানুষের তৈরি কিংবা কৃত্রিম এবং অপরটি হল চাঁদের মতো প্রাকৃতিক উপগ্রহ। আরেকটু পরিষ্কার করে বলতে গেলে, কৃত্রিম উপগ্রহ হলো মহাকাশে উৎক্ষেপিত বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় উদ্ভাবিত উপগ্রহ। আর এর সবচেয়ে বড় প্রয়োজনীয়তা মূলত, এটি ব্যাবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গার খবর আমরা নিমিষেই পেয়ে যাই।
কিভাবে উপরে পাঠানো হয় ?
কোনো বস্তুকে যদি অভিকর্ষ বলের সমান বলে বিপরীত দিকে ঠেলে দেয়া হয়, তবে যেখানে গিয়ে অভিকর্ষ বল নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে, সেখানে বস্তুটি চাঁদের মতো পৃথিবীর চারদিকে ঘুরতে থাকবে। আর আমরা জানি যে, ভুমি থেকে যত উপরে উঠা যায়, অভিকর্ষ বলের মান ততই কমতে থাকে এবং সেখানে বাধাও কম থাকে। এরজন্য স্যাটেলাইটকে প্রায় 930 কিলোমিটার উঁচুতে পাঠাতে হয়। এই উচ্চতায় তুলে ঘণ্টায় 39 হাজার কিলোমিটার বেগ দিয়ে পৃথিবীর সমান্তরালে ছেড়ে দিলেই এটি ঘুরতে থাকবে।আর মজার ব্যাপার হলো, এই বেগটা এক ধাপে তোলা যায় না। তোলা হয় তিন স্তরে।তিন স্তরে তোলার কারণ হলো প্রথম স্তরে থাকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল। সেখানে এতো বেগে বায়ুর সাথে ঘর্ষণ হলে আগুন জ্বলে উঠবে এবং স্যাটেলাইট পুড়ে যাবে। এই জন্য বায়ুস্তর অতিক্রম করার পর এই বেগ তোলা হয়। উপগ্রহটি বসানো হয় রকেটের মাথায়। জ্বালানি এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতি রকেটের ভিতরে থাকে।
রকেটেরও তিনটি স্তর থাকে।
নিচু স্তরের রকেটটি অন্য দুটো রকেট এবং স্যাটেলাইট বহন করে খাড়াভাবে 80 কিলোমিটার উপরে উঠে গিয়ে খসে পড়ে। এতে করে বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে ঘনস্তরের সাথে ঘর্ষণ এড়ানো যায়।
এরপর দ্বিতীয় রকেটটি ভূস্তরের সাথে 45 ডিগ্রী কোণ করে চলতে থাকে এবং তৃতীয় রকেটটিকে 160 কিলোমিটার উপরে তুলে দেয়। তখন এর বেগ হয় ঘণ্টায় 16 হাজার কিলোমিটার।এসময় দ্বিতীয় রকেটটি খসে পড়ে।
Open Space
Home Space কৃত্রিম উপগ্রহের ইতিবৃত্ত
SPACEটেকনোলজি | TECHNOLOGYপৃথিবী | EARTH
কৃত্রিম উপগ্রহের ইতিবৃত্ত
by Tanvir Siddike Moin
November 21, 2018
0 comment
কৃত্রিম উপগ্রহ কি ?
আমরা সকলেই জানি চাঁদ পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরে যা একটি উপগ্রহ হিসেবে পরিচিত। তেমনি কোন গ্রহকে কোন বস্তু একটি নির্দিষ্ট পর্যায়কাল মেনে প্রদক্ষিণ করলে তাঁকে আমরা উপগ্রহ হিসেবে চিনি। এই উপগ্রহ আবার দুই ধরনের হয়ে থাকে যার একটি হল মানুষের তৈরি কিংবা কৃত্রিম এবং অপরটি হল চাঁদের মতো প্রাকৃতিক উপগ্রহ। আরেকটু পরিষ্কার করে বলতে গেলে, কৃত্রিম উপগ্রহ হলো মহাকাশে উৎক্ষেপিত বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় উদ্ভাবিত উপগ্রহ। আর এর সবচেয়ে বড় প্রয়োজনীয়তা মূলত, এটি ব্যাবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গার খবর আমরা নিমিষেই পেয়ে যাই।
কিভাবে উপরে পাঠানো হয় ?
কোনো বস্তুকে যদি অভিকর্ষ বলের সমান বলে বিপরীত দিকে ঠেলে দেয়া হয়, তবে যেখানে গিয়ে অভিকর্ষ বল নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে, সেখানে বস্তুটি চাঁদের মতো পৃথিবীর চারদিকে ঘুরতে থাকবে। আর আমরা জানি যে, ভুমি থেকে যত উপরে উঠা যায়, অভিকর্ষ বলের মান ততই কমতে থাকে এবং সেখানে বাধাও কম থাকে। এরজন্য স্যাটেলাইটকে প্রায় 930 কিলোমিটার উঁচুতে পাঠাতে হয়। এই উচ্চতায় তুলে ঘণ্টায় 39 হাজার কিলোমিটার বেগ দিয়ে পৃথিবীর সমান্তরালে ছেড়ে দিলেই এটি ঘুরতে থাকবে।আর মজার ব্যাপার হলো, এই বেগটা এক ধাপে তোলা যায় না। তোলা হয় তিন স্তরে।তিন স্তরে তোলার কারণ হলো প্রথম স্তরে থাকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল। সেখানে এতো বেগে বায়ুর সাথে ঘর্ষণ হলে আগুন জ্বলে উঠবে এবং স্যাটেলাইট পুড়ে যাবে। এই জন্য বায়ুস্তর অতিক্রম করার পর এই বেগ তোলা হয়। উপগ্রহটি বসানো হয় রকেটের মাথায়। জ্বালানি এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতি রকেটের ভিতরে থাকে।
রকেটেরও তিনটি স্তর থাকে।
নিচু স্তরের রকেটটি অন্য দুটো রকেট এবং স্যাটেলাইট বহন করে খাড়াভাবে 80 কিলোমিটার উপরে উঠে গিয়ে খসে পড়ে। এতে করে বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে ঘনস্তরের সাথে ঘর্ষণ এড়ানো যায়।
এরপর দ্বিতীয় রকেটটি ভূস্তরের সাথে 45 ডিগ্রী কোণ করে চলতে থাকে এবং তৃতীয় রকেটটিকে 160 কিলোমিটার উপরে তুলে দেয়। তখন এর বেগ হয় ঘণ্টায় 16 হাজার কিলোমিটার।এসময় দ্বিতীয় রকেটটি খসে পড়ে।

তৃতীয় স্তরের রকেটটি ঘণ্টায় 39 হাজার কিলোমিটার বেগ সঞ্চার করে খসে পড়ে এবং উপগ্রহটি 930 কিলোমিটার উপরে উঠে ঘুরতে থাকে।
স্যাটেলাইটকে রকেট বা স্পেস শাটলের কার্গো বে-এর মাধ্যমে কক্ষপথে পাঠানো হয়। পাঠানোর সময় রকেট নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহৃত হয় ইনার্শিয়াল গাইডেন্স সিস্টেম (আইজিএস) মেকানিজম। পৃথিবীর অভিকর্ষ পার হতে রকেটকে ঘণ্টায় ২৫ হাজার ৩৯ মাইল ত্বরণে ছুটতে হয়।
স্যাটেলাইট স্থাপনের সময় কক্ষীয় গতি ও তার জড়তার ওপর পৃথিবীর অভিকর্ষের যে প্রভাব রয়েছে, এর জন্য সামঞ্জস্য বিধান করতে না পারলে স্যাটেলাইট এ অভিকর্ষের টানে ফের ভূপৃষ্ঠে চলে আসতে পারে। এ জন্য স্যাটেলাইটকে ১৫০ মাইল উচ্চতাবিশিষ্ট কক্ষপথে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১৭ হাজার মাইল গগিতে পরিভ্রমণ করানো হয়। মূলত গতিবেগ কত হবে, তা নির্ভর করে স্যাটেলাইটটি পৃথিবী থেকে কত উচ্চতায় রয়েছে, তার ওপর।পৃথিবী থেকে ২২ হাজার ২২৩ মাইল উপরে স্থাপিত স্যাটেলাইট ঘণ্টায় ৭০০ মাইল বেগে পৃথিবীকে আবর্তন করে। উপগ্রহ পৃথিবীকে ঘুরে আসতে সময় লাগে দেড় ঘণ্টা থেকে দুই ঘণ্টা।তবে কিছু কিছু স্যাটেলাইট আছে, যাদের আবর্তনকাল পৃথিবীর আবর্তনকালের সমান অর্থাৎ 24 ঘণ্টা।

No comments

Powered by Blogger.